গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার পর জীবিত উদ্ধার হওয়া দুজনের সন্ধান মিলছেনা। এদের একজন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিস্কৃত শিক্ষক হাসনাত করিম অন্যজন তাহমিদ খান। এই দুজনই পুলিশের সন্দেহের তালিকায় আছে ।
হামলার আট দিন পরেও তারা বাসায় ফেরেনি বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। এ ঘটনায় যে মামলা হয়েছে তাতে উদ্ধারদের তালিকায় নাম থাকলেও আসামিদের মধ্যে ওই দুজনের নাম নেই।
হাসনাত রেজা করিম
হাসনাত ও তাহমিদ কোথায় জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান শনিবার জানান, “যাদের উদ্ধার করা হয়েছিল তাদের সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ এখন পুলিশের কাছে নেই।”
গুলশানের ওই ক্যাফেতে ১ জুলাইয়ের জিম্মি দশার একটি ভিডিওচিত্র প্রকাশের পর নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক হাসনাতের বিরুদ্ধে হামলায় সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা উঠে আসে ফেইসবুকে।
নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরিরের সঙ্গে যোগাযোগের কারণে হাসনাতকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহতি দিয়েছিল বলে গণমাধ্যমের খবর। ক্যাফেতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে যে পাঁচ হামলাকারী নিহত হন, তাদের মধ্যে নিবরাজ ইসলামও ঢাকার এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী শাহরিয়ার খানের ছেলে তাহমিদ কানাডার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। একদিন আগে দেশে ফিরে হামলার দিন ইফতারের পর বন্ধুদের সঙ্গে তিনি ওই ক্যাফেতে গিয়েছিলেন ।
এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জীবিত অবস্থায় যে ৩২ জনকে উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে, সে তালিকায় হাসনাত ও তাহমিদের নাম রয়েছে।
ঘটনার কয়েকদিন পর ঢাকার পুলিশ কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এই দুজনের বিরুদ্ধে হামলায় সম্পৃক্ততার সন্দেহের কথা জানিয়েছিলেন।
গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সন্দেহের তালিকায় থাকা উদ্ধার হওয়া জিম্মি হাসনাত রেজাউল করিম ও তাহমিদ হাসিব খান তাদের হেফাজতেই আছেন।
পুলিশ এখন তাদেরকে নিজেদের জিম্মায় রাখার কথা অস্বীকার করলেও দুজনের বাবা বলছেন, তাদের ছেলেরা গোয়েন্দা পুলিশের কাছেই আছে।
হাসনাতের বাবা এম রেজাউল করিম বলেন, “ডিবি ওকে নিয়ে যাবার সময় বলেছিল বাসায় পৌঁছে দেবে। কিন্তু এখন তো ওর সঙ্গে দেখাও করতে পারছি না।”
ছেলে কোনো দোষ করেনি দাবি করে তিনি বলেন, হাসনাত অসুস্থ। দুই দফায় তার হার্টের অপারেশন হয়েছে। নিয়মিত তাকে ওষুধ খেতে হয়।
“এই কয়দিন হাসনাত হার্টের ওষুধ খেতে পারছে কি না জানি না।”
তাকে ওষুধ দেওয়ার সুযোগ দিতে পুলিশের মহাপরিদর্শক এবং ঢাকার পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন করবেন বলে জানান তিনি।
হাসনাতকে ফিরে পেতে আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে রেজাউল করিম বলেন, তার বিরুদ্ধে মামলা না হলে করার কিছু নেই বলে তারা জানিয়েছেন।
Be the first to comment